সাতক্ষীরায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৯ সদস্যের পদত্যাগ
ছাত্র-জনতার জুলাই বিপ্লবের প্রথম সারিতে যারা নেতৃত্ব দিয়েছেন তাদের বাদ দিয়ে আন্দোলনে যাদের কোনো ভূমিকা ছিল না তাদের নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাতক্ষীরা জেলা কমিটি গঠন করার অভিযোগ উঠছে। এ কমিটি বাতিলের দাবিতে গতকাল শনিবার দুপুরে খুলনা রোডস্থ মোড়ে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একাংশ এ অভিযোগ করেন। এ সময় নতুন কমিটি থেকে ৯ জন শিক্ষার্থী পদত্যাগ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক বখতিয়ার হোসেন।
তিনি লিখিত বক্তব্যে বলেন, সাতক্ষীরা জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন প্রথম থেকেই দীর্ঘ ১৬ বছরের ফ্যাসিস্ট হাসিনার বোমা-বন্দুকের সামনে বুক পেতে দিতে দ্বিধাবোধ করেনি। বর্তমানে সাতক্ষীরা জেলায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দলনের যে কমিটি দেওয়া হয়েছে সেটি একটি ভিত্তিহীন বিল্ডিং মাত্র। স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে প্রকৃত ত্যাগীদের অবমূল্যায়ন করে পকেট কমিটি করা হয়েছে। যারা সামনের সারিতে থেকে এই আন্দলনে নেতৃত্ব দিয়েছিল তাদের অধিকাংশকে বাদ দিয়ে এই কমিটি দেওয়া হয়েছে। তাই আমরা এই পকেট কমিটিকে প্রত্যাখ্যান করছি।
এই সংবাদ সম্মেলনের মধ্যদিয়ে নতুন এই কমিটি থেকে পদত্যাগ করেন অন্যতম যুগ্ম-আহ্বায়ক মো. ইখতিয়ার উদ্দিন, সায়েম রহমান সিয়াম, সদস্য এ.এইচ রিফাত, মুশফিকুর রহমান, মেহেদী হাসানসহ ৯ জন। পরবর্তীকালে অন্যরাও পদত্যাগ করবেন বলে জানানো হয়।
কেন্দ্রীয় নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে সমন্বয়ক বখতিয়ার হোসেন বলেন, সাতক্ষীরা জেলার এই কমিটি বাতিল করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যারা প্রথম সারিতে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন তাদের সবাইকে নিয়ে একটি নিরপেক্ষ কমিটির করার জোর দাবি জানাই।
সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাতক্ষীরার প্রধান সমন্বয়ক মো. ইমরান হোসেন বলেন, সাতক্ষীরায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যে কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে সেই কমিটিতে স্বজনপ্রীতি, আর্থিক লেনদেন এবং যোগ্য ব্যক্তিদের অবমূল্যায়ন করা হয়েছে। আমরা এই কমিটিকে প্রত্যাখ্যান করছি।
এসময় আরও বক্তব্য রাখেন- বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক এএইচ রিফাত, সায়েম রহমান সিয়াম, মাসকুরা পারভীন মৌসী প্রমুখ।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন- ইখতিয়ার উদ্দিন, মোল্লা মোহাম্মদ সাহাজুদ্দিন, মো. তানজিদুর রহমান, সাকিব হাসান, রাকিব হাসান, মোমিনুর রহমান, তুহিন হোসেন রিয়াদ, মিজান রহমান, আনারুল ইসলাম সান, সামিউজ্জামান শ্রাবণ, মোস্তাফিজুর রহমান, ইব্রাহিম খলিল, মেহেদী হাসান, তারিক ইসলাম প্রমুখ।
উল্লেখ্য, গত ২ জানুয়ারি রাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ ও সদস্যসচিব আরিফ সোহেল স্বাক্ষরিত পত্রে সাতক্ষীরার জেলার একটি কমিটি দেওয়া হয়। কমিটিতে আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয় আরাফাত হোসাইন ও সদস্য সচিব হিসেবে হন সুহাইল মাহদীন। মুখ্য সংগঠক আল শাহরিয়ার এবং মুখপাত্র হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয় মোহেনী পারভীনকে। কমিটির যুগ্ম-আহ্বায়ক হিসেবে রয়েছেন- মুজাহিদুল ইসলাম, মো. মিজানুর রহমান, মাসুম বিল্লাহ, সোহেলী তামান্না, মইনুল ইসলাম দীপু, আব্দুল্লাহ আল মামুনসহ আরও আটজন। যুগ্ম-সদস্যসচিব হিসেবে দায়িত্ব পান মো. নাজমুল হোসেন, মো. রেজওয়ান আহমেদ, ওমর তাসনিম রাহাতসহ আরও সাতজন। সংগঠক হিসেবে মনোনীত হন মো. হাসিবুল হাসান, আমিনুর রহমান রাতুল, শেখ ওমর ফারুকসহ মোট সাতজন। এছাড়াও ১২২ জন সদস্য হিসেবে কমিটিতে স্থান পেয়েছেন।


‘ছারপোকা মারার ওষুধের বিষক্রিয়ায়’ দুই শ্রমিকের মৃত্যু
No comments:
Post a Comment