www.chini24.online

www.chini24.online detailed reporting and presentation of information about current events, issues, or stories.

Subscribe Us

Sunday, 16 February 2025

ই-সিম বাংলাদেশে পিছিয়ে কেন?

 

বিশ্বজুড়ে বাড়ছে পরিবেশবান্ধব ই-সিমের ব্যবহার। ফিজিক্যাল সিম কার্ডের ঝামেলা এড়াতে প্রযুক্তিসচেতনরা ই-সিম সাপোর্টেড স্মার্টফোনই বেছে নিচ্ছেন। তাই মোবাইল নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানগুলো বিশ্বের অনেক দেশেই ডুয়েল ফিজিক্যাল সিম স্লটের পরিবর্তে একটি ফিজিক্যাল সিম স্লট রেখেই নতুন নতুন মডেলের ফোন বাজারে ছাড়ছে। ২০২৫ সালের মধ্যে ই-সিম সাপোর্টেড ফোনের সংখ্যা এক বিলিয়নে পৌঁছাবে।

ধারণা করা হচ্ছে, ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বজুড়ে প্রায় সাত বিলিয়নে গিয়ে দাঁড়াবে ই-সিম সাপোর্টেড ডিভাইস। ২০৩০ সালের মধ্যে উন্নত বিশ্বের দেশগুলোর বাজারে ফিজিক্যাল সিম স্লটবিহীন স্মার্টফোনের দাপট বাড়ার প্রবল সম্ভাবনা আছে। ২০১০ সালের নভেম্বরে সফটওয়্যার-বেইজড সিমকার্ডের ধারণা নিয়ে কাজ শুরু করে গ্লোবাল সিস্টেম ফর মোবাইল কমিউনিকেশনস অ্যাসোসিয়েশন (জিএসএমএ)।

প্রায় সাত বছর পর ২০১৭ সালে পিক্সেল ২ মডেলের মাধ্যমে প্রথম ই-সিম সাপোর্টেড স্মার্টফোন বাজারজাত করে গুগল। ২০১৮ সালে সনি ও অ্যাপল, ২০১৯ সালে মটোরলা এবং ২০২০ সালে স্যামসাং ই-সিম সাপোর্টেড স্মার্টফোন ফোন নিয়ে আসে। অ্যাপল ও স্যামসাং ই-সিম সাপোর্টেড স্মার্টফোন বাজারজাত করার পর থেকেই ই-সিমের ব্যবহার বাড়তে শুরু করে। ই-সিম হচ্ছে ফিজিক্যাল সিম কার্ডের ডিজিটাল সংস্করণ। ই-সিমের পূর্ণরূপ হচ্ছে, এমবেডেড সাবস্ক্রাইবার আইডেন্টিটি মডিউল, যা ফোনের ফিজিক্যাল সিমের কার্ডের পরিবর্তে ভার্চুয়াল/ডিজিটাল সিম হিসেবে কাজ করে। ফিজিক্যাল সিম ব্যবহারের জন্য সিম কার্ড স্মার্টফোনের সিম স্লটে ইনসার্ট করার প্রয়োজন হয়। কিন্তু ই-সিম ব্যবহার করতে ফোনে কোনো রকম সিম কার্ড ঢোকানোর দরকার পড়ে না। এক মিনিটের কম সময়ে কিউআর কোড স্ক্যান করে ই-সিম মোবাইলে ইনস্টল করে ব্যবহার করা যায়। ফিজিক্যাল সিমের চেয়ে ই-সিম ব্যবহার বেশ নিরাপদও।

ই-সিম ব্যবহারের অন্যতম সুবিধা হচ্ছে, সিম খুলে রাখলে হারানো কিংবা নষ্ট হওয়ার ঝুঁকি থাকে না। ফিজিক্যাল সিম সাপোর্টেড ডিভাইসে একসঙ্গে মাত্র দুটি সিম ইনসার্ট করা যায়। কিন্তু ই-সিম সাপোর্টেড ডিভাইসে অনেকগুলো ই-সিম ইন্সটল করা যায়। যেমন আইফোনে আটটির বেশি ই-সিম ইন্সটল করা যায়। সনি, স্যামসাং, গুগল, হুয়াওয়ে ও মটোরোলা ফোনে পাঁচ থেকে সাতটি ই-সিম ইন্সটল করা যায়। সরকারি উদ্যোগ ও মোবাইল ফোন অপারেটরগুলোর প্রচারণার অভাবে আধুনিক বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশ ই-সিম ব্যবহারে অনেক পিছিয়ে আছে। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে ই-সিমের ব্যবহার বেড়েছে, তবে বাড়ার হার মোটেই সন্তোষজনক নয়। কারণ টেলিকমিউনিকেশন দপ্তরের ব্যর্থতা এবং মোবাইল অপারেটরগুলোর মান্ধাতা আমলের পদ্ধতি অনুসরণ।

২০২২ সালের পর বাংলাদেশের মোবাইল অপারেটরগুলো ই-সিম সেবা চালু করলেও নতুন ই-সিম বিক্রি কিংবা মাইগ্রেট প্রক্রিয়া মোটেই ইউজার ফ্রেন্ডলি নয়। তাই বাংলাদেশের বাজারে ই-সিম সাপোর্টেড স্মার্টফোন এবং ই-সিম ব্যবহারে আগ্রহী হচ্ছেন না ব্যবহারকারীরা। বাংলাদেশের দুটি মোবাইল ফোন অপারেটরের ওয়েবসাইট ও কাস্টমার কেয়ারে যোগাযোগ করে ই-সিমসংক্রান্ত যে তথ্য পাওয়া গেছে তা যথেষ্ট হতাশাজনক।

অনলাইনে ই-সিম অর্ডার করলে ই-সিমের কিউআর কোর্ড ইমেইলে সেন্ড না করে বাসায় প্রিন্টেড কিউআর কোড ডেলিভারি দিচ্ছে বাংলাদেশের একটি মোবাইল অপারেটর, যা শুধু সময় কিংবা কাগজের অপচয় নয়, চরম হাস্যকর ব্যাপারও। পরিবেশবান্ধব ই-সিমের স্লোগানে সিম বিক্রি করে কাগজের অপচয় করা কেমন পরিবেশবান্ধবতা, সেটি মোবাইল অপারেটরটিই ভালো জানে। আরেকটি মোবাইল অপারেটর নিজেদের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে ই-সিমের প্রযুক্তিগত গুণগান গাইলেও অনলাইনে ই-সিম অর্ডার করার অপশনই রাখেনি! ই-সিম কিনতে হলে ভিজিট করতে হবে নির্দিষ্ট সেলস পয়েন্টে! ই-সিম শুধু আধুনিক কিংবা পরিবেশবান্ধবই নয়, বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য লাভজনকও।

ফিজিক্যাল সিম আমদানি করতে বিপুল পরিমাণ অর্থ দেশের বাইরে চলে যাচ্ছে। তাই বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব ই-সিম গ্রাহকদের জন্য সহজলভ্য করতে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) উচিত সঠিক পরিকল্পনা গ্রহণ। ই-সিমের দাম কোনো যুক্তিতেই ফিজিক্যাল সিমের সমান হওয়া উচিত নয়। কারণ একটি ফিজিক্যাল সিম আমদানি করতে যে অর্থ খরচ হয়, ই-সিমের বেলায় সেটি হয় না। মোবাইল অপারেটর নিজস্ব সিস্টেম থেকেই সিমের কিউআর কোড জেনারেট করতে পারে। পাশাপাশি ই-সিম ক্রয় ও মাইগ্রেট প্রক্রিয়া পুরাপুরি অনলাইনভিত্তিক হওয়া উচিত।

অন্যথায় বিশ্বজুড়ে প্রযুক্তির ডিজিটাল রূপান্তরের যে বিপ্লব চলছে, সেটি থেকে আরও বেশি পিছিয়ে পড়বে বাংলাদেশ।

No comments:

Post a Comment

Powered by Blogger.

Search This Blog

About Us

About Us
Lorem Ipsum is simply dummy text of the printing and typesetting industry. Lorem Ipsum has been the industry's.

Editors Choice

3/recent/post-list